বাংলাদেশ প্রতিবেদক: মানসিক চিকিৎসার নামে এএসপি আনিসুলকে হাসপাতালের মেঝেতে ফেলে বেধড়ক পেটায় প্রশিক্ষণহীন ওয়ার্ড বয়, ক্লিনারসহ ৬ কর্মচারী। এ সময় কোন ডাক্তারও ছিলেন না। এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, অনুমোদনহীন হাসপাতালটির বিরুদ্ধে সব ধরনের অনুসন্ধান করছে তারা, ছাড় পাবে না কেউ। হত্যা মামলায় গ্রেফতার ১০ আসামিকে ৭ দিন করে রিমান্ডে দিয়েছেন আদালত।
সিসিটিভির ছবিতেই স্পষ্ট কিভাবে ছয়জন চড়াও হয় এএসপি আনিসুল করিমের ওপর। কয়েক মিনিটেই নিস্তেজ হয়ে পড়ে তার দেহ।
হাসপাতালে দুই রাঁধুনিও দাঁড়িয়ে দেখেছিলেন সে ঘটনা। জানালেন এভাবে রোগীদের নির্যাতনের ঘটনা নতুন নয়।
প্রত্যক্ষদর্শী একজন বলেন, ‘যখন রোগীকে নিয়ে আসছে তখন সে সুন্দর করে হেটে আসছে। পরে দ্বোতালায় উঠে চিৎকার করলে সবাই সেখানে দৌঁড়ে যায় পরে সেখানে ঢুকতে পারিনা গেট লাগানো। দেখি এখানে ম্যানেজার স্যার ছিল, রোগী ছিল, সবাই ছিল, তখন ম্যানেজার স্যারকে একটা ঘুষি মারলে সবাইমিলে এখানে নিয়ে আসছে। অনেক অত্যাচার করছে, পরে শুনি সে মারা গেছে।’
এদিকে হাসপাতালটি পর্যবেক্ষণ করেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে কর্মকর্তারা। পরে ব্রিফিং-এ পুলিশ জানায় অনুমোদন না নিয়েই চলছিল হাসপাতালটির কার্যক্রম। প্রশিক্ষণহীন ওয়ার্ড বয়, ক্লিনারদের দিয়েই চলতো সেবাদান।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে কর্মকর্তারা বলেন, ‘আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি হাসপাতাল চালানোর মত যেসব কাগজপত্র, ব্যবস্থা, সুবিধা, জনবল তাদের কিছুই ছিল না। এই জন্য মার্চ মাসে তাদের আবেদনকে আমরা স্থগিত করেছি।’
হাসপাতালের ম্যানেজিং যারা ওয়ার্ড বয় থেকে শুরু করে যারা এই হাসপাতালে বিভিন্ন সময় মানুষকে হয়রানি করতেন। সে বিষয়ে আমরা সকল কিছু তদন্ত করছি। এবং আমরা এটাও লক্ষ্য করছি এই হাসপাতালের সাথে অন্যান্য হাসপাতালের কেউ যদি জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে অমানবিক নির্যাতনেই আনিসুলের মৃত্যু উল্লেখ করে আদালতে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ।
আইনজীবীরা বলছেন, ‘কারা মেরেছে কারা জড়িত আছে সবই সিসিটিভি ফুটেজে উঠে আসবে। তারপরও তদন্ত হচ্ছে, তদন্তে ৭ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।’
হত্যা মামলায় গ্রেফতার ১০ আসামিকে সাত দিন করে রিমান্ডে দিয়েছেন বিচারক। পাশাপাশি পালাতক ৫ আসামিকে দ্রুত গ্রেফতারের নির্দেশ দেন।