হুমায়ুন কবির: নেত্রকোনা কেন্দুয়ায় আলোচিত ঘটনা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইসের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র উত্তরপত্র প্রতারনা জালিয়াতির গঠনার অপরাধে কেন্দুয়া থানা পুলিশের এস.আই আবুল বাশার বাদী হয়ে কেন্দুয়া থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও পাবলিক পরীক্ষা (অপরাধ) আইনে
শিক্ষক শিক্ষিকা সহ ৩৭ জনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাতনামা ৬০ জন সহ ৯৭ জনের বিরুদ্ধে কেন্দুয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রোববার(৩০ জুন) মামলায় এজাহারভূক্ত ও প্রশ্নপত্র ফাঁস কেলেংকারীর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে
নেত্রকোনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ উবায়দুল্লাহ স্বাক্ষরীত এক আদেশে কেন্দুয়া, মদন, অাটপাড়ার ৮ জন শিক্ষক, শিক্ষিকা কে সাময়িক ভাবে বরখাস্তের নির্দেশ দেন।
এদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দুয়া উপজেলার দিগদাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মজিবুর রহমান, নওপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হাওয়া বেগম, লিপা মুনালিসা, বলাইশিমুল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মরিয়ম আক্তার, কেন্দুয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক তাহমিনা আক্তার, মদন উপজেলার জঙ্গলটেঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক জেবুন্নাহার ডলি, খাগরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক লাকি আক্তার, ও আটপাড়া উপজেলার তেলিগাতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক স্মৃতি খানমকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এছাড়াও একই ঘটনার সঙ্গে জড়িত
কেন্দুয়া উপজেলার বলাইশিমুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান ছোটন, উপজেলার বড়বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাকি ও পানগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তুহিন আক্তারকে সাময়িক ভাবে বরখাস্তের আবেদন জানিয়ে উপ-পরিচালক প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ময়মনসিংহ অঞ্চল বরাবর চিঠি পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
উল্ল্যেখ গত ২৮ জুন শুক্রবার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা নেত্রকোনা জেলা সদরের বিভিন্ন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। ওই পরীক্ষার্থীদের মাঝে ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইসের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করে প্রতারনার ও জালিয়াতির মাধ্যমে প্রশ্নপত্রের উত্তর সরবরাহের কাজে জড়িত একটি শক্তিশালী চক্রকে কেন্দুয়া পৌর এলাকার টেঙ্গুরী ছয়আনী গ্রামের শিল্পপতি মনিরুজ্জামান শামিমের বাড়িতে কেন্দুয়া থানা পুলিশ গোপনসূত্রে খবর পেয়ে ৩৪ জনকে গ্রেফতার করে।
এসময় পুলিশ ২টি ল্যাপটপ, ১টি ব্যাটারি, ২টি মডেম, ৭টি মোবাইল, ১টি চার্জার ও অন্যান্য গাইড বই সহ ১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা মূল্যের মালামাল জব্দ করে।
কেন্দুয়া থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা
মোঃ রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, মামলার তদন্তের স্বার্থে চাঞ্চল্যকর ঘটনার তথ্য উদঘাটনে প্রথম ধাপে শিক্ষক আব্দুল মান্নান ছোটন, আজহারুল ইসলাম, শরিফুজ্জামান ভূঞা মিন্টু, আব্দুস সাকি, মজিবুর রহমান, শিক্ষিকা মরিয়ম অাক্তার, স্মৃতি খানম,জেবুন্নাহার ডলিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে। আদালত আবেদনটি আমলে নিয়ে সোমবার (১জুলাই) শুনানীর দিন ধার্য্য করেছেন।
কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান জানান এটি একটি চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত ঘটনা, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকেই কোন প্রাকার ছাড় দেয়া হবেনা।