স্বপন কুমার কুন্ডু: ঈশ্বরদীতে স্বেচ্ছাশ্রমে ছিন্নমূল ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পথের পাঠশালা পরিচালিত হচ্ছে। ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনের প্লাটফর্মে চলছে দুই ঘণ্টার এই প্রতিশ্রুতি পথের পাঠশালা। ঈশ্বরদী ও পাবনাসহ বিভিন্ন শিা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত ১৮ তরুণ-তরুণী পালাক্রমে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে শহরের ছিন্নমূল, সুবিধাবঞ্চিত ও অসহায় শিশুদের এ পাঠশালায় পাঠদান করছেন।
প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত পথের এই পাঠশালায় ৩০ থেকে ৩৫ জন শিশু পড়ালেখা শিখছে। এসব শিশুর বয়স ৮ থেকে ১২ বছর। এদের কেউ পথশিশু, কারও কোন ঠিকানা নেই, স্টেশনেই জীবন কাটে। আবার কেউ বাড়িতে থাকলেও দারিদ্রতার কারণে স্কুলে যায় না, বাবা-মায়ের সাথে কাজ করে।
ঝরে পড়া এসব শিশুদের লেখাপড়ার জন্য প্রয়োজনীয় বই-খাতা, পেনসিল, বসার মাদুর-পাটিসহ সবকিছুই কিনে দিয়েছে পথের পাঠশালায় পাঠদানকারী শিক্ষার্থীরা। পরম মমতায় তারা এই শিশুদের পড়ালেখা শেখাচ্ছেন। লেখাপড়ার শেখানোর সাথে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত তরুণ স্বেচ্ছাসেবী শিার্থীরা সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের টিফিনেরও ব্যবস্থা করেছেন। পড়ালেখায় আগ্রহী এবং নিয়মিত হাজিরার জন্যই তারা টিফিনের ব্যবস্থা করেছে।
প্রতিশ্রুতির প্রতিষ্ঠাতা আসাদুজ্জামান রকিব জানান, আমরা বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াতের সময় রাস্তাঘাটে অনেক শিশুদের দেখি, যারা পড়ালেখা করে না এবং স্কুলে যায় না। এসব পথশিশু ও সুবিধাবঞ্চিতদের কথা ভেবেই আমরা কয়েকজন বন্ধু স্টেশনের প্লাটফর্মের কৃষ্ণচূড়ার গাছের ছায়ায় তাদের পড়ালেখার ব্যবস্থা করেছি। আমরা নিজেদের পকেট খরচ সাশ্রয় করে এদের পড়ালেখা শেখানোর উদ্যোগ নিয়েছি।
প্রতিশ্রুতি পথের পাঠশালা পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পি.এম.ইমরুল কায়েস। তরুণ শিক্ষার্থীদের মহৎ এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, সমাজের বিত্তবানরা যদি এগিয়ে আসেন তাহলে দেশের উন্নয়ন আরও ত্বরান্বিত হবে।