সোমবার, মে ৬, ২০২৪
Homeসারাবাংলাউল্লাপাড়ায় নিজস্ব জায়গা ছেড়ে ৯ বছর ধরে বিদ্যালয়ের জায়গায় চলছে হাট

উল্লাপাড়ায় নিজস্ব জায়গা ছেড়ে ৯ বছর ধরে বিদ্যালয়ের জায়গায় চলছে হাট

সাহারুল হক সাচ্চু: উল্লাপাড়া সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার পুর্বদেলুয়া হাটটি অতি পুরানো কালের। প্রায় দেড়’শ বছরের হাট। এ হাট তার নিজস্ব জায়গায় নেই। প্রায় নয় বছর ধরে নাম ঠিক রেখে অন্য জায়গায় নিয়মিত বসানো হচ্ছে। আর অনিয়ম করেই তা লাগানো হচ্ছে। স্থানীয় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একেবারে পাশে এ হাট বসছে। আর এ জায়গা বিদ্যালয়েরই বলে জানা যায়। এদিকে হাটের নিজস্ব জাযগার বেশি অংশ বেদখলের কবলে গেছে। সেখানে ধান চাতাল করা হয়েছে। উল্লাপাড়া উপজেলার বড়হর ইউনিয়নের পুর্বদেলুয়া নদী পাড়ে হাটটির নিজস্ব জায়গা রয়েছে। বড়হর ইউনিয়ণ ভুমি অফিস সুত্রে, পুর্বদেলুয়া হাটের নিজস্ব জাযগার পরিমাণ ৫৫ শতক। উপজেলার সবচেয়ে পুরানো ক’টি হাটের একটি হলো পুর্বদেলুয়া হাট। প্রবীণ ব্যাক্তিদের বক্তব্যে এ হাটটি প্রায় দেড়’শ বছরের। এক সময় এলাকার নাম করা হাট ছিলো। বিভিন্ন পন্যের জমজমাট কেনা বেচা ছিল। সপ্তাহের দু’দিন শনিবার ও মঙ্গলবার নিজস্ব জাযগায় হাটটি বসতো। আগে ইউনিয়ন বোর্ড হতে এ হাটের ইজারা ডাক হতো বলে জানা যায়। এখন অনেক বছর হলো স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন থেকে সরকারী ভাবে এ হাটের বাৎসরিক ইজারা ডাক হয়। ইউএনও অফিস সুত্রে, এ বছর (বাংলা সাল) ইজারা মুল্য হয়েছে ৭৪ হাজার ৮শ ২০ টাকা। এবারে ইজারা নিয়েছেন মোঃ শামছুল ইসলাম। জানা গেছে, গত নয় বছর ধরে পুর্বদেলুয়া হাট তার নিজস্ব জায়গায় আর লাগানো হচ্ছে না। নিজস্ব জায়গা থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দুরে আরেক জায়গায় পুর্বদেলুয়া হাট নামেই নিয়মিত লাগানো হচ্ছে। এখন যেখানে হাট বসছে সেখানে হাটের নিজস্ব কোন জায়গা নেই। পুর্বদেলুয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশেই হাটটি লাগানো হচ্ছে। বিদ্যালয় ভবন ঘেষে দোকান আর গরু খাটাল রয়েছে। এ হাটের আরেক পাশ দিয়ে পুর্ণিমাগাতী পাকা সড়ক রয়েছে। বিগত ২০১১ সাল থেকে নতুন এ জায়গায় হাটটি লাগানো হচ্ছে। সে সময় হাটের ইজারা নিয়ে ছিলেন্ধসঢ়; মোঃ শরিফুল ইসলাম। নিজস্ব জায়গা ছেড়ে এ জায়গায় হাট লাগানোর পিছনে স্থানীয় ক’ব্যাক্তির উৎসাহ ও উদ্যোগ ছিল বলে জানা যায়। এখানেও সপ্তাহে দু’দিন শনিবার ও মঙ্গলবার নিয়মিত হাট বসছে। এর মধ্যে একদিন মঙ্গলবার হাটে গরু কেনা বেচা হয়। এ হাটের সাবেক ইজারা নেওয়াদের একজন মোঃ শরিফুল ইসলাম বলেন, বিগত ২০১১ সাল থেকে নিজস্ব জায়গা ছেড়ে হাটটি এখানে বসছে। তিনি সে সময় হাট ইজারা নিয়ে ছিলেন। পুর্বদেলুয়া গ্রামের বেশ ক’জনের সিন্ধান্তে নিজস্ব জায়গা ছেড়ে নতুন ভাবে এখনকার জাযগায়

হাট বসানো শুরু হয়। তাদের লক্ষ্য ও চিন্তা ভাবনা ছিল এখনকার জাযগায় হাটটি লাগিয়ে ব্যাপক উন্নয়ন করা। এর জন্য বিভিন্ন সিন্ধান্ত নেওয়া হলেও তার আর বাস্তবায়ন করা যায়নি। তিনি আরো জানান, সরকারী প্রশাসনকে লিখিতভাবে কোন কিছুই না জানিয়ে হাটটি এখানে লাগানো হয়েছে। এখনো সেভাবে চলছে। এ জায়গা স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বলে তিনি জানান। এবারে ইজারা নেওয়া মোঃ শামছুল ইসলাম জানান, তার নিজেরও জানা আছে হাটের নিজস্ব জায়গা রয়েছে। যেহেতু আগের ইজারা নেওয়া ব্যাক্তিরা এখানেই হাটটি লাগিয়েছেন। তিনি চাইলেও নিজস্ব জায়গায় হাটটি লাগাতে তার একার পক্ষে সম্ভব নয়। এদিকে সরেজমিনে আরো দেখা গেছে, পুর্বদেলুয়া হাটের নিজস্ব জায়গার পাশে একটি ধান কল রয়েছে। এর মালিক হলেন মোঃ বক্কার মিয়া। তিনি হাটের বেশি অংশ জায়গা ধান শুকানোর চাতাল করে দখলে নিয়েছেন। তিনি জানান, হাটটি এখান থেকে সরিয়ে নেয়ার পর জায়গা এমনিতেই খালি পড়ে ছিলো। তাই তিনি মাটি ফেলে চাতাল করেছেন। এখানে আবার হাটটি লাগানো হলে অবশ্যই দখল ছেড়ে দেবেন বলে জানান। জানা গেছে, পুর্বদেলুয়া হাটটি পরিচালনায় একটি কমিটি রয়েছে। একমিটিতে রয়েছেন বড়হর ইউপির এক নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বর) শ্রী বাবলু রায়। তিনি জানান, পুর্বদেলুয়া হাটটির ঐতিহ্য রয়েছে । নিজস্ব জায়গা ছেড়ে যাওয়ায় সে জায়গা বেদখল হয়েছে। এখনকার জায়গায় হাট লাগানোর কারণে পাশের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পড়া লেখার কিছুটা হলেও বিঘিœত হচ্ছে। আর বিদ্যালয়েরও পরিবেশ নষ্ট হ্েধসঢ়;চ্ছ। এ হাট তার নিজস্ব জায়গাতেই লাগানো দরকার বলে তিনি মনে করেন। হাটটি তার নিজস্ব জায়গায় গেলে সেখানেও উন্নয়ন হবে। পুর্বদেলুয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মোছাঃ মাহমুদা খাতুন জানান, বিগত ২০১০ সাল থেকে তিনি বিদ্যালয়টিতে আছেন। তিনি এ বিদ্যালয়ে আসার পরের বছর থেকে এখানো হাট লাগানো হচ্ছে। বিদ্যালয়ে ঢোকার পথে হাট লাগানোর জায়গা বিদ্যালয়ের নিজস্ব। সে সময় তাকে বলা হয়ে ছিল হাটটি এখানে অস্থায়ীভাবে বসানো হচ্ছে। বিদ্যালয়ের পিছনের সরকারী খাল ভরাট করে সেখানে হাট বসানো হবে বলে তাকে জানানো হয়ে ছিল। অথচ দীর্ঘদিনে তা করেননি। বিষয়টি তিনি হাট লাগানোর বছর স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়ে ছিলেন। এরপর আর জানাননি।এখানে হাটের কারনে বিদ্যালয়ের পরিবেশ কিছুটা হলেও নষ্ট হয়েছে। তিনি আরো জানান হয়তো সামনের দেড়-দু’মাসের মধ্যে বিদ্যালয়ের বাউন্ডারী দেয়াল নির্মাণ করা হবে। তখন আর এখানে তার বিদ্যালয়ের জায়গায় হাট বসতে পারবে না। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এম জি মাহমুদ ইজদানী জানান, তিনি এর আগে বিদ্যালয়ের জায়গায় হাট লাগানো নিষেধ করে দিয়ে ছিলেন। এখনও সেখানে হাট লাগানোর বিষয়টি তিনি জরুরী ভাবে দেখবেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ আরিফুজ্জামান জানান, নিজস্ব জাযগা ছেড়ে অন্য জায়গায় পুর্বদেলুয়া হাট লাগানো বিষয়টি তার জানা নেই। তিনি অবশ্যই বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান।

আজকের বাংলাদেশhttps://www.ajkerbangladesh.com.bd/
আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল নিউজ পেপার এখন দেশ-বিদেশের সর্বশেষ খবর নিয়ে প্রতিদিন অনলাইনে । ব্রেকিং নিউজ, জাতীয়, আন্তর্জাতিক রিপোর্টিং, রাজনীতি, বিনোদন, খেলাধুলা আরও অন্যান্য সংবাদ বিভাগ । আমাদের হাত বাধা নেই, আমাদের চোখ খোলা আমরা বলতে পারি ।
RELATED ARTICLES
- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments