ফেরদৌস সিহানুক শান্ত: গ্রামের সহজ সরল সাধারণ মানুষকে অতিরিক্ত লাভ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিতো মহানন্দা পল্লী উন্নয়ন সংস্থা নামের একটি ভূয়া এনজিও। বিভিন্ন গ্রাহককে অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে ও টাকা ঋণ দেওয়ার উস্কানি দিয়ে অসহায় দুঃস্থদের জমাকৃত কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ভুয়া এনজিওর কর্মীরা। এমনকি ঋণ দেয়ার সময় এর বিপরীতে গ্রাহকদের থেকে নেয়া ফাঁকা চেকের মামলা দেয়ার ব্ল্যাকমেইল করে আদায় করত অতিরিক্ত টাকা।
গ্রাহকের প্রায় টাকা আত্নসাতের অভিযোগে এমনই এক ভুয়া এনজিও ও প্রতারক চক্রের মূলহোতা ও মাঠ কর্মীসহ তিনজনকে আটক করেছে র্যাব-৫, সিপিসি-১ চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্প। মঙ্গলবার (২১ মার্চ) রাত আড়াইটার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ র্যাব ক্যাম্প থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
র্যাব জানায়, সোমবার (২০ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টার দিকে গোমস্তাপুর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের কাউন্সিল বাজারস্থ মহানন্দা পল্লী উন্নয়ন সংস্থার অফিস রুম হতে তাদেরকে আটক করা হয়। এসময় ভূয়া পাশবই, সীল, বিভিন্ন ব্যাংকের ফাঁকা চেক জব্দ করে র্যাব।
আটককৃতরা হলেন- গ্রাহকের জমাকৃত কোটি টাকা আত্মসাৎকারী প্রতারক চক্রের মূলহোতা ও ভুয়া এনজিওর পরিচালক গোমস্তাপুর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের কাশিয়াবাড়ি গ্রামের মৃত মাহাবুবুল আলমোর ছেলে মো. ওয়াহিদুজ্জামান (৪২), মাঠকর্মী দুর্গাপুর গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেনের ছেলে মো. শিমুল আলী (২৮), অফিস সহায়ক ঘাটনগর গ্রামের আনিরুল ইসলামের ছেলে মো. ফিরোজ আলী (২৪)।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়, এই চক্রটি সংঘবদ্ধভাবে গ্রামের সহজ সরল সাধারণ মানুষের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য মহানন্দা পল্লী উন্নয়ন সংস্থা নামের একটি ভূয়া এনজিও প্রতিষ্ঠা করে। এই এনজিওতে বিভিন্ন গ্রাহককে অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে গরীব অসহায় লোকদের বিনিয়োগ করতে এবং টাকা ঋণ নেয়ার জন্য উস্কানি দেয়। এমনকি ঋণ দেয়ার বিপরীতে গ্রাহকদের থেকে ফাঁকা চেক নিয়ে পরে ব্ল্যাকমেইল করে অতিরিক্ত টাকা করতো তারা। পরে গ্রাহকের জমাকৃত লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতো।
র্যাব আরও জানায়, অসংখ্য ভূক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে চাঁপাইনবাগঞ্জের র্যাবের চৌকষ গোয়েন্দা দল দীর্ঘদিন ধরে এ বিষয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করে। সম্প্রতি গনমাধ্যমে এনওজিও-র বিষয়ে ব্যাপক লেখালেখি হলে র্যাব তা আমলে নিয়ে এই অভিযান করতে উদ্বুদ্ধ হয়। এতে মহানন্দা পল্লী উন্নয়ন সংস্থার প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ তিনজনকে আটক করা হয়। মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি-এমআরএ’র অনুমোদন ছাড়াই তারা দীর্ঘদিন ধরে ক্ষুদ্র ঋণের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে, যা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি ও অপরাধ।
গ্রেফতারকৃদের বিরুদ্ধে গোমস্তাপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানায়, র্যাব-৫ সিপিসি-১ চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্প। এছাড়াও র্যাব নিয়মিত জঙ্গী, সন্ত্রাসী, সংঘবদ্ধ অপরাধী, অস্ত্রধারী অপরাধী, মাদক, ভেজাল পণ্য, ছিনতাইকারীসহ হেরোইনের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করেছে বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।