বাংলাদেশ প্রতিবেদক: ভারতের সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘আজকেও সংবাদপত্রে দেখলাম, ভারত যুক্তরাজ্যের সাথে বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা করছে। বাংলাদেশ নিয়ে এতো মাথাব্যথা কেন?’
শুক্রবার (৭ মার্চ) সকালে জুলাই আন্দোলনের রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের শহীদ পরিবারের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ প্রশ্ন করেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘অবাক হই যখন দেখি ভারত আমেরিকায় গেলে বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা করে। কেন? বাংলাদেশে কি সরকার নেই? এটি স্বাধীন দেশ নয়? বাংলাদেশের একটি স্বাধীন পতাকা আছে, জাতীয় সংগীত আছে। আপনি পাশের রাষ্ট্র আলাদা স্বাধীন দেশ। বাংলাদেশ নিয়ে অন্য দেশের সাথে আলোচনা করার অধিকার আপনাকে কে দিয়েছে?’
তিনি বলেন, ‘এখনো ৯-১০ মাস সময় আছে। নির্বাচন কমিশন চাইলে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন সম্ভব। কারণ নির্বাচন করবে নির্বাচন কমিশন। আর সরকার সহায়তা করবে। কেউ কেউ বলছেন, গণপরিষদ নির্বাচন করতে হবে। কিন্তু আমরা তো এটা বুঝতে পারছি না যে কি কারণে গণপরিষদ করতে হয়। এটা তখনই দরকার যখন এর মাধ্যমে একটা সংবিধান রচনা করা হয়। আমাদের তো সংবিধান আছে। শেখ হাসিনা সংবিধানে অনেক ধরনের ফ্যাসিবাদী আইন-কানুন যুক্ত করেছেন। কিন্তু এটা তো সংশোধনেরও বিধান রয়েছে। অনেকবার সংশোধনও হয়েছে। তাহলে গণপরিষদ আসছে কেন? এ কথাগুলো বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে।’
‘সংস্কার করতে কতদিন সময় লাগে’ প্রশ্ন তুলে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আজকে যারা সংস্কারের কথা বলছেন, এ সংস্কার করতে কতদিন সময় লাগে? পুলিশ আচরণ করবে আইন অনুযায়ী। কোনো ক্ষমতাশালীর কথা তারা শুনবে না। প্রতিষ্ঠান চলবে আইনের গতিতে। এটা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এটার জন্য কতদিন প্রয়োজন? এছাড়া সংস্কারের জন্য বিভিন্ন কমিশন করা হয়েছে।‘
বিএনপির এ সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব আরো বলেন, ‘সরকার নির্বাচনের জন্য এক মাস দিয়েছিল। বলেছিল ডিসেম্বরে নির্বাচন হতে পারে। আবার শুনছি কেউ কেউ বলছে, এ সময়ে নির্বাচন করা সম্ভব নয়। আমরা আশা করবো সরকার দেশের মানুষের সাথে ন্যায়সংগত আচরণ করবে। কারণ ড. ইউনূস একজন সম্মানিত ব্যক্তি।
তিনি আরো বলেন, ‘আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে হবে, তারপর স্থানীয় সরকার নির্বাচন। আর সংস্কার তো চলমান ধারা। এটা চলবে যাতে কোনোদিন কোনো ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দিতে না পারে। বাপেরই জন্ম হলো না, সন্তান জন্ম হবে কি করে? জনগণের ক্ষমতা জনগণকে ফিরিয়ে দিতে হলে আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে হবে।’
এ সময় ভারতের সমালোচনা করে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘শেখ হাসিনা ছিলেন লুটেরা। একটা দস্যু দলের সর্দারনী। হিটলার ফ্যাসিস্ট ছিলেন, তবে দেশপ্রেমও ছিল তার। শেখ হাসিনা তার কাছ থেকে ফ্যাসিস্ট হওয়া শিখেছিলেন কিন্তু দেশপ্রেম শেখেননি। তার আমলে কিসের আদালত, কিসের আইন, কিসের বিচার? তিনি যা বলতেন তাই হতো। শেখ হাসিনা হচ্ছেন সুপ্রিম কোর্টের ওপরে। আইন-আদালতে যাই লেখা থাকে শেষ কথা হচ্ছে শেখ হাসিনা। কোনো কিছুই তিনি মানতেন না।‘
রাজশাহী নগরীর ভুবনমোহন পার্ক শহীদ মিনার চত্বরে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে আমরা বিএনপি পরিবারের সভাপতি আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন সদস্য সচিব মোকছেদুল মোমিন মিথুন।
এ সময় বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, আমরা বিএনপি পরিবারের উপদেষ্টা আবুল কাশেম, মোস্তফা-ই-জামান সেলিম, আশরাফ উদ্দিন বকুল, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈসা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।