শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪
Homeসারাবাংলাওসি মোয়াজ্জেমকে পুরস্কৃত করা উচিত ছিল: পরিবার

ওসি মোয়াজ্জেমকে পুরস্কৃত করা উচিত ছিল: পরিবার

কাগজ প্রতিবেদক: ওসি মোয়াজ্জেমের মা মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘নুসরাতের ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনায় আমার ছেলের দোষ নেই।’ ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন নির্দোষ দাবী করেছেন তার ভাই আরিফুজ্জামান খন্দকার ও মা মনোয়ারা বেগম। আরিফুজ্জামান জানান, নুসরাত হত্যার প্রধান আাসমি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলাকে গ্রেপ্তারের জন্য তার ভাইকে পুরস্কৃত করা উচিত ছিল।

আজ সোমবার বিকেলে মুঠোফোনে এমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তারা।

আরিফুজ্জামান খন্দকার তার ভাইকে নির্দোষ দাবী করে বলেন, নুসরাতের যৌন হয়রানীর ঘটনায় বিষয়ে কথপোকথনের সময় করা ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবে তার ভাই জড়িত নন।

আরিফুজ্জামান বলেন, ‘নুসরাত হত্যার প্রধান আাসমি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলা ক্ষমতাধর ব্যাক্তি। তার বিরুদ্ধে ভিকটিমের বক্তব্য আমার ভাই ফোনে ভিডিও করেছিল এটা ঠিক। সেই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কখনো প্রকাশ করেননি আমার ভাই। পিবিআইয়ের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে সময় টেলিভিশনের স্থানীয় সাংবাদিক আতিয়ার হাওলাদার সজল সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই ব্যাপারে সোনাগাজি মডেল থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। সেখানে আমার ভাইয়ের ফোন থেকে কীভাবে টিভি সাংবাদিক সজল ভিডিও চুরি করে ইসলামী ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় সাবেক সভাপতি ডা. ফখরুদ্দিনকে দেন এবং পরে ওই শিবির নেতা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন তার বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে।’

‘কিন্তু দুর্ভাগ্য দেশে একই আইনে আমার ভাইকে গ্রেপ্তার করে এখন জেলে দিলো আদালত। আর ওই সাংবাদিক আইনের উর্ধে থেকে গেল! এখন সেই সাংবাদিক মামলার বাদী ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনের সঙ্গে সেলফি দিয়ে গ্রেপ্তারের উৎসব করছে।’

আরিফুজ্জামান অভিযোগ করেন, নুসরাত হত্যার মূল মামলা বাদ দিয়ে তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা সাইবার ক্রাইম মামলা নিয়ে বেশি তোড়জোড় করা হচ্ছে। অথচ আলোচিত ওই ভিডিওটিই নুসরাতের দেওয়া বড় নথি, যার ভিত্তিতে তার ভাই অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলাকে গ্রেপ্তার করেছিলেন। এ জন্য ভাইকে পুরস্কৃত করা উচিত ছিল। বিনা অপরাধে তাকে জেল খাটানো হচ্ছে।’

এ বিষয়ে সাংবাদিক আতিয়ার সজল বলেন, ‘ওসির মোবাইল ফোনসেট থেকে চুরি করে ভিডিও সংগ্রহ করা এবং তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানোর কথা একেবারেই ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ওসি নিজেই ওই ভিডিও ধারণ করেন এবং তা বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীদের সরবরাহ করেন। তিনি তা প্রচারেরও অনুরোধ জানান।’

এর আগে সোমবার (১৭ জুন) দুপুরে ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির আনা যৌন হয়রানির অভিযোগ ভিডিওতে ধারণ এবং তা ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন । একই সঙ্গে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য পরবর্তী তারিখ আগামী ৩০ জুন নির্ধারণ করেন আদালত।

ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে তার মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলার বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের নামে নুসরাতের বক্তব্য ভিডিও করেন ওসি মোয়াজ্জেম। পরে সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

ভিডিও করে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে ১৫ এপ্রিল ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সুমন। বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ ও মামলার নথি পর্যালোচনা করে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন ২৭ মে ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। পরোয়ানা জারির ২০ দিন পর গতকাল রোববার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে হাইকোর্ট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে শাহবাগ থানা পুলিশ।

পুলিশ সদর দপ্তরের তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী, গত ৮ মে মোয়াজ্জেমকে সাময়িক বরখাস্ত করে রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়। মে’র তৃতীয় সপ্তাহে তিনি রংপুর রেঞ্জ অফিসে যোগ দেন।

আজকের বাংলাদেশhttps://www.ajkerbangladesh.com.bd/
আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল নিউজ পেপার এখন দেশ-বিদেশের সর্বশেষ খবর নিয়ে প্রতিদিন অনলাইনে । ব্রেকিং নিউজ, জাতীয়, আন্তর্জাতিক রিপোর্টিং, রাজনীতি, বিনোদন, খেলাধুলা আরও অন্যান্য সংবাদ বিভাগ । আমাদের হাত বাধা নেই, আমাদের চোখ খোলা আমরা বলতে পারি ।
RELATED ARTICLES
- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments