মঙ্গলবার, এপ্রিল ২৩, ২০২৪
Homeসারাবাংলারূপপুর প্রকল্পের গাড়িচালক হত্যায় সীমার স্বীকোরক্তিমূলক জবানবন্দি

রূপপুর প্রকল্পের গাড়িচালক হত্যায় সীমার স্বীকোরক্তিমূলক জবানবন্দি

স্বপন কুমার কুন্ডু: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিকিমথ কোম্পানির গাড়িচালক সম্রাট খান হত্যার ঘটনায় ধৃত নারী সীমা খাতুন মঙ্গলবার বিকেলে স্বীকোরক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। পাবনার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক মোহাম্মদ শামসুজ্জামান এর আদালতে সম্রাট হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার গোস্বামী জানিয়েছেন।

এরআগে রবিবার (২৬ মার্চ) ঈশ্বরদী থানা পুলিশ পলাতক আসামী আব্দুল মমিনের স্ত্রী সীমা খাতুনকে আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জরের প্রার্থনা করে। আদালত সীমার ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারী) ২ দিনের রিমান্ড শেষে সীমা হত্যার দায় স্বীকার করেন।

এদিকে র‌্যাব-১২ এর বিশেষ অভিযানে এবং র‌্যাব-৩ এর সহযোগীতায় স¤্রাট খান হত্যা মামলার আসামী সীমার স্বামী আব্দুল মমিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মমিনকে ঈশ্বরদী থানায় হস্তান্তরের পর মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) আদালতে হাজির করে ২ দিনের রিমান্ডের প্রার্থনা করা হয়। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক মোহাম্মদ শামসুজ্জামান ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। বুধবার রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করা হবে বলে ঈশ্বরদী থানার ওসি অরবিন্দ সরকার জানিয়েছেন।

ওসি আরো জানান, রিমান্ডে আনার পর সুমির দেওয়া তথ্য মোতাবেক বাড়ির টয়লেটের সেফটি ট্যাংকের ভেতর হতে হত্যায় ব্যবহৃত হাতুড়ি এবং পাশের বাড়ির অব্যবহৃত সেফটি ট্যাংকি হতে সম্রাটের ভেঙ্গে ফেলা মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়েছে।

পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানান, সীমাকে রিমান্ডে আনার পর হতে ধারাবাহিকভাবে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সীমা জানায়, সম্রাট ছবি-ভিডিও ফ্লাশ করার কথা বলে বিভিন্নভাবে তাকে ব্লাকমেইল করতো। স্বামীর সাথে বন্ধুত্বের সূত্র ধরে পারিবারিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং উভয় পরিবারের বাড়িতে যাতায়াত ও খাওয়া-দাওয়া চলতো। এরই এক পর্যায়ে সম্রাট গোপনে তাকে কিছু খাওয়ালে সে অচেতন হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় তাকে ধর্ষণের সাথে সাথে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে। সেই ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে বার বার ডাকতো এবং অসামাজিক কাজে লিপ্ত হতে বাধ্য করতো। যা তার স্বামী আব্দুল মমিনও জানতো। সীমা ও স্বামী মমিন সম্রাটের ওপর চরম ক্ষুব্ধ ছিলো। ঘটনার রাতে সম্রাট বাঁশেরবাদায় তাদের বাড়িতে যায় এবং খাওয়া-দাওয়া করে। পরে সম্রাট বিছানায় শুয়ে পড়ে বলে মাথা ব্যাথা করছে। মমিনকে ওষুধ আনার জন্য দোকানে পাঠায়। মমিন ওষুধ কিনতে গেলে সম্রাট সীমার গায়ে হাত দেয় এবং ধর্ষণের চেষ্টা করে। এরইমধ্যে মমিন ফিরে এসে সম্রাটের ওপর চড়াও হয়ে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে। সীমা ভিকটিম সম্রাটের গোপনাঙ্গ জোড়ে চেপে ধরলে সে দূর্বল হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে মমিন এবং সীমা দুজনে মিলেই দুজনের আঘাতেই সম্রাটের মৃত্যু হয়।

প্রসঙ্গত: নিখোঁজের দুই দিন পর শনিবার (২৫ মার্চ) সকালে কুষ্টিয়ার শিলাইদহ ঘাট এলাকা থেকে চালক সম্রাট খানের লাশসহ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিকিমথ কোম্পানির ব্যবহৃত প্রাডো গাড়িটি উদ্ধার হয়। নিহত গাড়িচালক সম্রাট হোসেন (২৯) ঈশ্বরদী পৌর শহরের মধ্য অরণকোলা (আলহাজ ক্যাম্প) এলাকার আবু বক্কার সিদ্দিকের ছেলে। পুলিশ এঘটনায় নিহত সম্রাটের বন্ধু একই উপজেলার বাঁশেরবাদা গ্রামের আব্দুল মমিনের স্ত্রী সীমা খাতুনকে (৩০) আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে সীমা খাতুন স্বীকার করে যে সম্রাটকে হত্যার পর লাশ বস্তায় ভরে প্রাডো গাড়িতে তুলে স্বামী মমিন নিয়ে যায়। এরপর থেকেই মমিন পলাতক ছিলো। র‌্যাব-১২ এর বিশেষ অভিযানে এবং র‌্যাব-৩ এর সহযোগীতায় সীমার স্বামী আব্দুল মমিনকে গ্রেফতার হয়।

আজকের বাংলাদেশhttps://www.ajkerbangladesh.com.bd/
আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল নিউজ পেপার এখন দেশ-বিদেশের সর্বশেষ খবর নিয়ে প্রতিদিন অনলাইনে । ব্রেকিং নিউজ, জাতীয়, আন্তর্জাতিক রিপোর্টিং, রাজনীতি, বিনোদন, খেলাধুলা আরও অন্যান্য সংবাদ বিভাগ । আমাদের হাত বাধা নেই, আমাদের চোখ খোলা আমরা বলতে পারি ।
RELATED ARTICLES
- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments