শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪
Homeসারাবাংলাকরোনা উপসর্গে বৃদ্ধের মৃত্যু, ঘরে লাশ ফেলে পালালেন স্বজনরা

করোনা উপসর্গে বৃদ্ধের মৃত্যু, ঘরে লাশ ফেলে পালালেন স্বজনরা

বাংলাদেশ প্রতিবেদক: পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় সোহরাফ হোসেন হাওলাদার (৬০) নামে এক বৃদ্ধ করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। ওই বৃদ্ধ গত শনিবার ঢাকা থেকে সর্দি-জ্বর নিয়ে বাড়িতে ফিরে রোববার রাতে নিজ বাড়িতে মারা যান। পরে করোনার ভয়ে পরিবারের স্বজনরা তার লাশ ঘরে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।

খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন ঘটনাস্থলে গিয়ে রাতেই ওই বৃদ্ধের লাশ দাফন করেন। লাশের গোসল ও জানাজা পড়ান উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তৌহিদুল ইসলাম।

মৃত সোহরাব হোসেন ঢাকায় সিকিউরিটি গার্ডের চাকুরি করতেন। তিনি উপজেলার রাজপাশা গ্রামের মৃত আব্দুল গফ্ফার হাওলাদারের ছেলে। তিনি তিন সন্তানের জনক।

হাসপাতাল ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, রাজপাশা গ্রামের বৃদ্ধ সোহরাফ হোসেন ঢাকা থেকে গত শনিবার সর্দি-জ্বর নিয়ে বাড়িতে আসেন। ওই দিনই তিনি গুরুতর অসুস্থ বোধ করলে স্বজনরা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে তার প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। রোববার রাতে তিনি হঠাৎ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। তিনি করোনা আক্রান্ত এমন সন্দেহে পরিবারের সদস্যরা লাশ ঘরে ফেলে রেখে পালিয়ে যান। সেই সঙ্গে মৃত বৃদ্ধের প্রতিবেশী আপন দুই ভাইও পালিয়ে যান। স্থানীয়রা উপজেলা ও থানা প্রশাসনকে খবর দিলে ইউএনও নাজমুল আলম, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এইচ.এম. জহিরুল ইসলাম ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তৌহিদুল ইসলামসহ পুলিশ রাতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। লাশ উদ্ধার করে মেডিকেল টিম করোনা সংক্রমণ পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করে। প্রশাসন পরিবারের স্বজন কাউকে না পেয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান মোঃ সিদ্দিকুর রহমান টুলুর সহায়তায় এক ব্যাক্তিকে দিয়ে ওই বৃদ্ধের পারিবারিক কবরস্থানে কবর খোড়া হয়। পরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তৌহিদুল ইসলাম নিজেই লাশের গোসল ও জানাজার ইমামতির দায়িত্ব পালন করেন। এভাবে রাত ১২টার দিকে ওই বৃদ্ধের লাশ দাফন সম্পন্ন হয়।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি ) মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, করোনার সংক্রমণের ভয়ে স্বজনরা লাশ ফেলে পালিয়েছেন। উপজেলা প্রশাসন যথাযথ নিয়ম মেনে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করেছে। আমি লাশের গোসল করিয়েছি ও জানাজা পড়িয়েছি। কিন্তু দুর্ভাগ্য স্বজনরা কেউ কাছে আসেননি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এইচ.এম জহিরুল ইসলাম, ওই ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত কিনা তা এখনও আমরা নিশ্চিত নই। তার নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।

ভান্ডারিয়া উপজেলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে বরেন, মৃত ওই ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত কিনা তা নিশ্চিত না। তবে করোনার ভয়ে স্বজনরা তার লাশ ফেলে পালিয়েছেন। এটা দুঃখজনক। প্রশাসন খবর না পেলে আজও হয়তো হতভাগ্য ওই বৃদ্ধের লাশ ঘরে পড়ে থাকতো।

আজকের বাংলাদেশhttps://www.ajkerbangladesh.com.bd/
আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল নিউজ পেপার এখন দেশ-বিদেশের সর্বশেষ খবর নিয়ে প্রতিদিন অনলাইনে । ব্রেকিং নিউজ, জাতীয়, আন্তর্জাতিক রিপোর্টিং, রাজনীতি, বিনোদন, খেলাধুলা আরও অন্যান্য সংবাদ বিভাগ । আমাদের হাত বাধা নেই, আমাদের চোখ খোলা আমরা বলতে পারি ।
RELATED ARTICLES
- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments