শুক্রবার, মে ১৭, ২০২৪
Homeসারাবাংলাআগামী ২ আগস্ট রংপুর সফরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

আগামী ২ আগস্ট রংপুর সফরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

জয়নাল আবেদীন: দীর্ঘ পাঁচ বছর পর আগামী ২ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রংপুর সফরে আসছেন। ওই দিন বিকেলে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগের রংপুর বিভাগীয় জনসভায় বক্তব্য রাখবেন। এর আগে ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর নির্বাচনী জনসভায় রংপুরের তারাগঞ্জ ও পীরগঞ্জ উপজেলায় বক্তব্য রাখেন।রংপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা জানান, তিনি মুলত আগামী বছরে অনুষ্টিত সংসদ নির্বাচনের প্রচারণা রংপুর থেকে শুরু করবেন। তাই তাকে বরণ করতে ২০ জুলাই থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, জনসভায় রংপুর বিভাগের আট জেলার আটান্নটি উপজেলা থেকে আট থেকে দশ লাখ মানুষ অংশ নিবে। রংপুর জেলার আট উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের আওয়ামীলীগের নেতারা জানান, প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় অংশ নেওয়ার জন্য প্রতিটি উপজেলা থেকে কমপক্ষে দশ থেকে পনের হাজার মানুষ আনার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এজন্য বাস ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহন বুকিং দেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলার বেশ কয়েকজন আওয়ামীলীগ নেতা জানান, এই অঞ্চলের যারা সংসদ সদস্য আছেন বিশেষ করে তাদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে লোক সমাগমের জন্য। এতে করো বোঝা যাবে তৃণমূলে কার প্রভাব কতো। জনসভা সফল করতে আওয়ামী লীগের বিভাগীয় বর্ধিত সভা করা হয়েছে। ওই সভায় ৪ মন্ত্রীসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়ার প্রতিদিন আওয়ামীলী, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ আওয়ামীলীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন প্রধানমন্ত্রী জনসভা সফল করতে কর্মীদের দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। জনসভার পশিাপাশি প্রধানমন্ত্রী বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।

রংপুর মহানগর আওয়ামীলীগের নেতারা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে রংপুর বিভাগ, রংপুর সিটি কর্পোরেশন, বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রতিষ্ঠা হয়েছে। পীরগঞ্জে মেরিন একাডেমি, উপজেলাগুলোতে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন, তিস্তা সড়ক সেতু নির্মাণসহ নানা উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন হয়েছে। এলেঙ্গা থেকে রংপুরের মর্ডাণ মোড় পর্যন্ত ছয়লেন মহাসড়কের কাজ চলমান। পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহের কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তার প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন আর উন্নয়নের মোড়কে একসময়ের মঙ্গাপীড়িত রংপুরকে বদলে দিয়েছেন।

২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়ের মধ্যদিয়ে বদলে যেতে থাকে রংপুর। এরপর টানা তিনবার সরকারে থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রংপুর পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, আদালতের বহুতল ভবন, সিভিল সার্জনের নতুন ভবন, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স, জেলা শিল্পকলা একাডেমি, বিভাগীয় সদর দফতর, রংপুর শিশু হাসপাতাল ও পুলিশ হাসপাতাল, আধুনিক পুলিশ লাইন্স নির্মাণ করেছেন। বর্তমানে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা ও সব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য রংপুর এখন উত্তরাঞ্চলের রাজধানী।উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে ১৭ তলাবিশিষ্ট ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণ, র‌্যাব-১৩ ব্যাটালিয়ন সদর দফতরসহ বিভিন্ন সরকারি অবকাঠামো। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিস্তাপাড়ের মানুষের ভাগ্যবদলে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের।

তিস্তাপাড়ের সাধারণ মানুষ এবং তিস্তা নিয়ে যারা আন্দোলন করে আসছেন, তাদের আশা প্রধানমন্ত্রী রংপুরের জনসভায় বহু আকাঙ্ক্ষিত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন নিয়ে কোনো সুখবর নিশ্চয়ই দেবেন। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হলে তিস্তাপাড়ের মানুষের পানির জন্য অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে না।তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সফিয়ার রহমান বলেন, ২০১১ থেকে ২০১২ সালের দিকে যখন ভারতের সঙ্গে পানিচুক্তি হলো না, তখন তিনি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কথা জানিয়েছিলেন। আমরা সেই সময় তিস্তাপারের লক্ষাধিক মানুষ প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে বিশাল মিছিল ও সমাবেশ করেছিলাম। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য সেটি এক যুগেও বাস্তবায়ন হয়নি।তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে এক কোটি মানুষ উপকৃত হবে। এতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিস্তাপারের ১৩ থেকে ১৪টি উপজেলা ও ১১টি সংসদীয় আসনের ২৫ থেকে ৩০ লাখ ভোটার প্রধানমন্ত্রীর ওপর আস্থা আনবে।প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে গত এক সপ্তাহ ধরে রংপুরে চলছে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগ। প্রতিদিন সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে মহাসমাবেশ সফল করতে মিটিং মিছিল করছেন।

রংপুর বিভাগের প্রতিটি জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটিগুলোও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সিটি কর্পোরেশনের থানা কমিটি থেকেও চলছে পাড়া-মহল্লায় গণসংযোগ।রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও গঙ্গাচড়া আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজু জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই রংপুরের উন্নয়নের দায়িত্ব নিয়েছেন। তার আমলে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। উন্নয়নের কারণে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে রংপুরের মানুষ আওয়ামী লীগগকে বিমুখ করবে না বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, গঙ্গাচড়া আসনে নির্বাচনের জন্য তিনি একজন মনোনয়ন প্রত্যাশী। এ লক্ষ্যে তিনি গণসংযোগ করে যাচ্ছেন।মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডল বলেন, নেতাকর্মীরা চায় রংপুর সদর আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দেয়া হউক। আমি দীর্ঘদিন ধরে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে গণসংযোগ করে আসছি। আশা করছি দলের পক্ষ থেকে রংপুর সদর আসনের ব্যাপারটি গুরুত্বসহকারে দেখা হবে।

আজকের বাংলাদেশhttps://www.ajkerbangladesh.com.bd/
আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল নিউজ পেপার এখন দেশ-বিদেশের সর্বশেষ খবর নিয়ে প্রতিদিন অনলাইনে । ব্রেকিং নিউজ, জাতীয়, আন্তর্জাতিক রিপোর্টিং, রাজনীতি, বিনোদন, খেলাধুলা আরও অন্যান্য সংবাদ বিভাগ । আমাদের হাত বাধা নেই, আমাদের চোখ খোলা আমরা বলতে পারি ।
RELATED ARTICLES
- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments