বাংলাদেশ প্রতিবেদক: পরকীয়ায় আসক্ত স্বামী ঠাণ্ডা মাথায় স্ত্রীকে খুন করার পর লাশ টয়লেটে রেখে ৯৯৯-এ ফোন করেন। স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে জানালেও পুলিশ বলছে, মূলত নিজের অপরাধ আড়াল করতেই জাতীয় জরুরি সেবার আশ্রয় নেন স্বামী বিল্লাল হোসেন (২৪)। তবে শেষ রক্ষা হয়নি খুনির। পুলিশের জেরার মুখে খুনের দায় স্বীকার করে নির্মম এ খুনের বর্ণনাও দেন ঘাতক স্বামী।
বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাতে জেলার উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের জামতলী এলাকার একটি বাসা থেকে গৃহবধূ ফাতেমা খাতুনের (২৩) লাশ উদ্ধার করে উখিয়া থানা পুলিশ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিল্লাল পুলিশকে জানায়, ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ভালোবেসে বিয়ে করেন দু’জনই। দু’জনেই পেশায় নার্স এবং এনজিও সংস্থা এমএসএফ হাসপাতালে চাকরি করেন। স্বামী-স্ত্রী দু’জনই পালংখালী ইউনিয়নের জামতলী এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছিলেন। এরই এক পর্যায়ে পরকীয়ায় জড়ানো নিয়ে তাদের মধ্যে শুরু হয় অবিশ্বাসের। এ থেকে পারিবারিক কলহ। পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামী বিল্লাল হোসেন তার স্বী ফাতেমা খাতুনকে গলাটিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ বাথরুমে রশি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখেন।
তবে পুলিশি জেরায় হত্যার কথা স্বীকার করেন তিনি। পরে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি।
জামালপুরের ঘোড়ধাপ গ্রামের আলাল উদ্দিনের মেয়ে ফাতেমা খাতুন (২৩) এবং টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলার জোড়দীঘি গ্রামের নান্নু মিয়ার ছেলে বিল্লাল হোসেন (২৪)।
পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমার ইউনিয়নে এমন ঘটনা খুব দুঃখজনক। তবে স্বামী বিল্লাল হোসেন ও স্ত্রী ফাতেমা খাতুনের মতো শত শত এনজিও কর্মী আমার ইউনিয়নে বাসা ভাড়ায় থাকছে। স্থানীয়দের ছাঁটাই করে উত্তরবঙ্গ থেকে লোক এনে এখানে চাকরি করাচ্ছে একটি মহল। মোটা অংকের বেতন পাওয়ায় তারা বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে। ফলে এমনসব ঘটনা হচ্ছে।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমেদ সঞ্জুর মোরশেদ বলেন, রাত আনুমানিক ১২টায় স্বামী বিল্লাল হোসেন ও স্ত্রী ফাতেমা খাতুনের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। ঝগড়ার এক পর্যায়ে স্ত্রীকে ঠাণ্ডা মাথায় খুন করার পর বিল্লাল হোসেন ৯৯৯-এ ফোন করে তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে পুলিশের সাহায্য চান। পুলিশ দ্রুত তার বাসায় গিয়ে ফাতেমা খাতুনকে টয়লেটে দেখতে পায়। পরে পুলিশ গিয়ে ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে এবং বিল্লাল হোসেনকে হেফাজতে নিয়ে আসে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে স্ত্রীকে খুন করার কথা স্বীকার করেন।
এ ঘটনায় গৃহবধূর বাবা আলাল উদ্দিন থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন বলেও জানান তিনি।