বিমল কুন্ডু: সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রেদোয়ান (১১) নামে দ্বিতীয় শ্রেনীর এক স্কুল ছাত্রকে অপহরনের পর নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। অপহরনের ৩ দিন পর আজ ২০ মার্চ সোমবার থানা পুলিশ উপজেলার পোতাজিয়া ইউনিয়নের যদুর বিল এলাকার ঘাস ক্ষেত থেকে নিহতের ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করেছে। এঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। নিহত রেদোয়ান উপজেলার রতনকান্দি উত্তরপাড়া গ্রামের মমিরুল ইসলামের ছেলে। সে স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেনের দ্বিতীয় শ্রেনীর ছাত্র।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার বিকেলে রেদোয়ানে অপহরণ করা হয়। একই দিন সন্ধ্যায় অপহরণকারীরা মোবাইল ফোনে শিশুটির বাবা মমিরুল ইসলামের কাছে মুক্তিপন হিসেবে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। অনথ্যায় রেদোয়ানকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। একপর্যায়ে রাতেই পিতা মমিরুল ছেলে রেদোয়ানকে বাঁচাতে বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা পাঠান। এরপর থেকেই অপহরনকারীদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
পরদিন শনিবার সকালে মমিরুল ইসলাম সন্দেহভাজন ৩ জনকে আসামী করে শাহজাদপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে গতকাল রবিবার (১৯ মার্চ) রাতে থানা পুলিশ অপহরনকারী ৩ জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। একপর্যায়ে আসামীদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী আজ সোমবার সকালে শাহজাদপুরে সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম, থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুল মজিদ, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সাজ্জাদুর রহমান সহ পুলিশের একটি দল আসামীদের সাথে নিয়ে উপজেলার পোতাজিয়া ইউনিয়নের যদুর বিলের ঘাস ক্ষেত থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে।
থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুল মজিদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, আসামীরা স্কুল ছাত্র রেদোয়ানকে অপহরণ ও হত্যার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আটক ৩ জনের বিরুদ্ধে অপহরণ ও হত্যা আইনে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামীরা হলো, উপজেলার রতনকান্দি গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে সাগর (১৮), একই গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে নাঈম (১৭) এবং জিগারবাড়িয়া গ্রামের হালিমের ছেলে সাকোয়াত (১৯)। তিনি আরও জানান, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এদিকে দ্বিতীয় শ্রেনীর ছাত্রকে অপহরণের পর নৃশংসভাবে হত্যা করার ঘটনায় এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।