শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪
Homeসারাবাংলাজয়পুরহাটে পান-সিগারেটের দোকানে বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার!

জয়পুরহাটে পান-সিগারেটের দোকানে বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার!

শাহারুল আলম: সরকারি নীতিমালা না মেনে জয়পুরহাট জেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হচ্ছে পেট্রোলিয়াম (এলপি) গ্যাসের সিলিন্ডার। এসব সিলিন্ডার বিক্রির ফলে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে সাধারণ মানুষ। খাবার ঔষুধের দোকান, পান-সিগারেটের দোকান, মুদির দোকান এমনকি কাপড়ের দোকানেও এসব গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে অবাধে। দেখার যেন কেউ নেই এ জেলা শহর থেকে শুরু উপজেলা শহরগুলোতে। জেলার বিভিন্ন উপজেলার গ্রামাঞ্চলের হাটবাজার ঘুরে দেখা গেছে অন্তত তিন শতাধিক বিভিন্ন প্রকারের দোকানে দেদারছে বিক্রি হচ্ছে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার। অথচ এ জেলায় এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির জন্য বৈধ্যভাবে লাইসেন্স দেওয়া আছে প্রায় একশ’টিরও বেশী ব্যবসায়ীকে। গত এক বছরে জেলায় ৩০টি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। এমনকি চলতি জানুয়ারি মাসেও ক্ষেতলাল উপজেলার মুন্দাইল ও জয়পুরহাট পৌর শহরের হাউজিং অ্যাস্টেটে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। রাজশাহী বিভাগীয় বিস্ফোরক পরিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসা করতে হলে একজন ব্যবসায়ীকের সরকারি বিধি মোতাবেক কমপক্ষে পাকা মেঝেসহ আধা পাকা ঘর, ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপক সক্ষমতা-সংক্রান্ত লাইসেন্স, অগ্নিনির্বাপক সিলিন্ডার এবং মজবুত ও ঝুঁকিমুক্ত সংরক্ষণাগার থাকতে হবে। একজন ব্যবসায়ী ওই সব শর্ত পূরণ করলেই কেবল এলপি গ্যাস বিক্রির নিবন্ধন পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। লাইসেন্স ছাড়া কোনও দোকানে এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি করা যাবে না। ২০০৩ সালের দাহ্য পদার্থ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী কোন ব্যক্তি যদি লাইসেন্স না নিয়ে বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবসা করে, তবে তার তিন বছরের কারাদন্ড ও অতিরিক্ত অর্থদন্ডে দন্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে। প্রয়োজনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সমস্ত মালামাল বাজেয়াপ্ত করা যাবে। কিন্তু এই আইন কেউই মানছেন না এ জেলা শহর থেকে শুরু করে পাঁচটি উপজেলা শহর পর্যন্ত। জেলার খঞ্জনপুর এলাকার বাদশা চৌধুরী, আরাফাতনগর এলাকার শীতল চন্দ্র ও নতুনহাট এলাকার সোহেল হোসেন, পাঁচবিবি উপজেলা শহরের পরিমল, কালাই উপজেলা শহরের কামরুল হাসানসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির ক্ষেত্রে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি দেয়া দরকার। সরকারি ভাবে এসব বাজারে তদারকি না থাকার কারণে যত্রতত্র ভাবে চলছে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি। আগের মত আর ডিলারদের নিকট গিয়ে আনতে হয়না এসব সিলিন্ডার। হাত বাড়ালেই এলপি গ্যাস সিলিন্ডার পাওয়া যায় এ জেলার সবখানে। ফলে সাধারণ মানুষ মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে দিয়ে চলছে এসব দোকানের আশপাশ দিয়ে। যে কোন মহুর্তে ঘটতে পারে বড় ধরণের দূর্ঘটনা। তখন আর তদারকি করে কোন লাভ হবে না। লাইসেন্সধারী এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রেতা মাসুম ট্রেডার্সের প্রোপাইটার আবদুল্লাহ্ধসঢ়; আল মাসুম ও সিথি ট্রেডার্সের শওকত জামান জানান, গ্যাস সিলিন্ডার অনেকটা বোমার মতো। এসব সিলিন্ডার বিক্রি করতে হলে অবশ্যই পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্স, বিস্ফোরক লাইসেন্স ও অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের ব্যবস্থা থাকতে হবে। তা না হলে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করতে পারবে না। তারা আরও বলেন, বিস্ফোরক লাইসেন্স নিতে অনেক টাকা খরচ হয়। যাদের লাইসেন্স নেই, তারা সকলেই অবৈধ। অবৈধ্য ব্যবসায়ীদের কারণে বৈধ ব্যবসায়ীদের বিক্রি কমে গেছে। বৈধ্য ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন খরচের কারণে কম দামে বিক্রি করতে না পারাই দিন দিন তারা ব্যবসাতে অমনোযুগী হয়ে পড়ছে। জয়পুরহাট জেলার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ওয়ারহাউজ ইন্সপেক্টর মাহবুব-উ-জ্জামান মানিক বলেন, লাইসেন্স ছাড়া যারা ব্যবসা করছে তাদেরকে আমরা লাইসেন্স করতে বলছি। এছাড়া ডিলারদেরকে খুচরা বিক্রেতাদের লাইসেন্স দেখে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করতে বলা হয়েছে। তারপরও কেন এমন হচ্ছে এবং যেখানে সেখানে সিলিন্ডার পাওয়া যাচ্ছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, বিস্ফোরক লাইসেন্স ছাড়া এলপি গ্যাস সিলিন্ডার যারা বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে খুব দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আজকের বাংলাদেশhttps://www.ajkerbangladesh.com.bd/
আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল নিউজ পেপার এখন দেশ-বিদেশের সর্বশেষ খবর নিয়ে প্রতিদিন অনলাইনে । ব্রেকিং নিউজ, জাতীয়, আন্তর্জাতিক রিপোর্টিং, রাজনীতি, বিনোদন, খেলাধুলা আরও অন্যান্য সংবাদ বিভাগ । আমাদের হাত বাধা নেই, আমাদের চোখ খোলা আমরা বলতে পারি ।
RELATED ARTICLES
- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments